সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ::
বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথের ওয়ার্কচার্জড্ কর্মচারীদের চাকুরী নিয়মিতকরণ দাবী জোরদার হচ্ছে। দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর ধরে অবহেলিত সরকারী সড়ক উন্নয়ন কাজে সম্পৃক্ত কর্মচারীরা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে মাঠে নেমেছে। গত ১৭ জুলাই থেকে কর্মবিরতি পালন করছে কক্সবাজারের ওয়ার্কচার্জড্ কর্মচারীরা। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত
সরকারী তহবিল থেকে মৃত ওয়ার্কচার্জড্ কর্মচারীদের অনুদান প্রদান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা রাজস্ব খাতে পদায়ন, পেনশন/গ্রেচ্যুয়িটিসহ সবধরণের সরকারী সুবিধা নিশ্চিত করার দাবীতে বুধবার (১৯ জুলাই) দুপুরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিয়েছে তারা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, সারাদেশে প্রায় ৭৩০৪ জন কর্মচারী জড়ক ও জনপথ বিভাগে কর্মরত। দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করেও স্বীকৃতি মেলেনি তাদের। মুখে সরকারী কর্মচারী বলা হলেও কাজের বেলায় ন্যায্য পাওনা বঞ্চিত। নেই পেনেশন/গ্রেচ্যুয়িটি সুবিধা। ২০১২ সালের ১ আগষ্ট ওয়ার্কচার্জড্ কর্মচারীদের বিশেষ বিবেচনায় নিয়মিতকরণের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। দীর্ঘ ৫টি বছর পার হলেও প্রধানমন্ত্রীর সেই আদেশ বাস্তবায়ন হয়নি।
স্মারকলিপি সুত্রে জানা গেছে, ওয়ার্কচার্জড্ কর্মচারীরা বোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে জীবন ঝুঁকি নিয়ে সরকারী সড়ক উন্নয়ন কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু কোন কর্মচারীর মৃত্যু অথবা অবসরে গেলে কোন ধরণের পেনেশন/গ্রেচ্যুয়িটির ব্যবস্থা নেই। অনেক কর্মচারী সরকারি চাকুরীবিধি মোতাবেক ৫৯ বছর পূর্ণ হয়ে পেনশনে গেলেও পেনেশন/গ্রেচ্যুয়িটি কিংবা অন্যান্য সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত। কর্মরত অবস্থায় মারা গেলেও সরকারী অনুদান পায়না। অথচ অনিয়মিত সরকারী কর্মচারীরা মারা গেলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে অনুদান হিসেবে ৮ লাখ টাকা এবং পেনশনের সকল সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন।
গত ১৬ জুলাই কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বরইতলী এলাকায় কর্মরত অবস্থায় মারাতœক সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যান ওয়ার্কচাইজড্ কর্মচারী কামাল হোসেন। তিনি সরকারী দায়িত্বপালনকারী অবস্থায় মারা গেলেও শুধুমাত্র ওয়ার্কচাইজড্ কর্মচারী হওয়ায় কোন ধরণের আর্থিক সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেনা। কামাল হোসেনের মৃত্যুর পর তার পরিবারের সদস্যরা অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। এমতাবস্থায় ওয়ার্কচার্জড্ কর্মচারীদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়ন এবং কর্মরত অবস্থায় মারা যাওয়া ব্যক্তিকে এককালীন ১০ লাখ টাকা সরকারী অনুদান দাবী করা হয়।
জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন জেলা সংসদের সভাপতি আকবর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম, সিনিয়র সহ-সভাপতি হারুনর রশিদ, সহ-সভাপতি আহসানুল আলম, বকুল লাল বড়–য়া, উপদেষ্টা নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ আহমদ, কোষাধ্যক্ষ আবুল কাশেম, নির্বাহী সদস্য জাহাঙ্গীর আলম।
এদিকে চাকুরী জাতীয়করণ না হওয়ায় এবং উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবীতে গত ১৭ জুলাই থেকে কক্সবাজারে কর্মবিরতি পালন করছেন ওয়ার্কচার্জড্ কর্মচারীরা। ২৩ জুলাই এর মধ্যে দাবী বাস্তবায়ন না হলে আরো কঠোর আন্দোলনে যাবার হুঁশিয়ারী দিয়েছে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম। তিনি বলেন, কামাল হোসেনসহ ইতোপূর্বে যেসব ওয়ার্কচার্জড্ কর্মচারী মারা গেছেন, সরকারী তহবিল থেকে তাদের ন্যূনতম ১০ লাখ টাকা অনুদান এবং তাদের পরিবারকে পনির্বাসন করতে হবে। আমাদের চাকুরী রাজস্ব খাতে পদায়ন ও সকল সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, কাজের চাপ বেড়েছে, সুযোগ-সুবিধা কমেছে। জেলায় প্রায় ৪০০ জন ওয়ার্কচার্জড্ কর্মচারী ছিল। এখন ১০০ জনেরও কম। ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা না হলে আগামীতে ওয়ার্কচার্জড্ কর্মচারী পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। বিষয়টি বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে অনুরোধ করেছেন ওয়ার্কচার্জড্ কর্মচারীদের নেতা আবদুর রহিম।
পাঠকের মতামত: